Search The Blog

Wednesday, January 12, 2022

কালচারাল শক - সাংস্কৃতিক ধাক্কা (জার্মানি) - পার্ট ০১

পৃথিবীতে নানা দেশ আছে আর প্রতিটি দেশের সংস্কৃতিও আলাদা। আমরা যখন নিজ দেশ ছেড়ে অন্য কোনো দেশে যাই তখন ঐ দেশের ভাষা, নিয়মকানুন, আচার-আচরণ ইত্যাদি দেখে বিস্মিত হই। এটাই মূলত Cultural Shock বা সাংস্কৃতিক ধাক্কা। 


ভ্রমণের জন্য পূর্বে নেপাল ও শ্রীলংকায় গেলেও ইয়োরোপের কোনো দেশ হিসেবে জার্মানী হচ্ছে আমার প্রথম যাত্রা। এখানে এসে আমি বেশ কিছু নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি যা নিয়ে আমি কয়েক পর্বে আলোচনা করবো। 

১.
একদম প্রথমেই যেটা বলবো সেটা হলো এখানে অনেক ঠান্ডা যা আপনাদের সবারই জানা আছে। দেশে থাকতে প্রচন্ড শীতেও শুধুমাত্র একটা চাঁদর গায়ে দিয়ে বের হয়েছি কিন্তু এখানে তা একেবারেই অসম্ভব! তাই এতো এতো ভারী কাপড় পরার ভয়ে মাঝেমধ্যে বাইরে যাওয়ার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও বের হইনা। 

২.
যেহেতু আমি অবিবাহিত সেহেতু ভেবেছিলাম বাংলাদেশের মতো এখানেও হয়তো বাসা ভাড়া নিতে বিয়ের সার্টিফিকেট দেখানো লাগবে। কিন্তু না এখানে ব্যাচেলর হলেও আপনাকে বাসা খুঁজে পেতে কোনো সমস্যা হবে না যদি আপনি নিয়মিত বাসা ভাড়া পরিশোধ করেন। জার্মানিতে অসংখ্য অবিবাহিত আছেন যারা একা থাকতেই পছন্দ করেন এবং তাদের অনেকেই বুড়ো! ফিউউ!

ফলসপার্ক, বার্লিন
৩.
আমাদের দেশে বাথরুম/টয়লেটে প্রাকৃতিক কার্য  সম্পাদন করে পানি নেয়ার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু  এখানে তা মোটেও নেই। আপনাকে টিস্যু পেপার  দিয়ে পরিষ্কার হতে হবে অথবা আগে থেকে পানির  বন্দোবস্ত করে রাখতে হবে। শৌচকার্যের জন্য পানির  ব্যবস্থা না থাকায় আমি খুবই বিব্রতবোধ করি। গোসল  ও অন্যান্য কাজে পানি ব্যবহার করায় আমাদের  টয়লেটের মেঝে অনেক স্যাঁতস্যাঁতে থাকে কিন্তু  এখানে ফ্লোর একদমই শুকনা কারণ ওরা বাথটবে  গোসল করে। হতে পারে কিছু কিছু জার্মান ট্রেডিশনাল বাসায়  গোসলখানা রান্না ঘরের সাথে থাকে যেমনটা আমার। কারণ টয়লেট  রুম ছোট হওয়ায় বা পুরনো মডেলের বাসা হওয়ায় আলাদা করে এটা করা হয়ে থাকে। 

৪.
আমরা সিনেমা হলে যেয়ে মুভি দেখেই চলে আসি। ভাবছেন মুভি দেখে চলে আসবো না তো কি বসে থাকবো! না, এখানে মুভি শেষ হওয়ার পরও আপনি দেখবেন মানুষ বসে আছে। কারণ যারা এই মুভি বা ডকুমেন্টারি তৈরি করেছেন তাদের সবার নাম মুভি শেষে দেখানো হয়। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেই সবাই নাম শেষ না হওয়া পর্যন্ত বসে থাকে। আমি বার্লিনে মুভি থিয়েটারে যেয়ে এটা প্রথম লক্ষ্য করি। 

৫. 
এখানে কোনো যানবাহন থেকে আপনি হর্নের শব্দ শোনবেন না। একবার আমি আর আমার রুমমেট একটা সরু রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম। হঠাৎ আমি পেছনে তাকিয়ে দেখি একটা মাইক্রোবাস আমাদের পিছনে ধীরে ধীরে আসছে কিন্তু হর্ন বাজায়নি। পরে তড়িঘড়ি করে বিনয়ের সাথে তাকে যেতে দিলাম। অলিগলিতে আপনি রাস্তা পার হচ্ছেন দেখলে গাড়ি নিজে থেকে থামিয়ে আপনাকে যেতে দিবে। আর হাইওয়েতে নিশ্চয়ই জেব্রা ক্রসিং আছে। আপনাকে তখন সিগন্যাল দেখেই রাস্তা পার হতে হবে।  

৬.
শেষ একটা বিষয় দিয়ে আজকে মত ইতি টানবো। সেটা হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ! আমার জার্মান রুমমেট কথা প্রসঙ্গে আমাকে জানায় যে সে এটা নিয়ে একদমই গর্বিত নয় এবং জার্মানরা এই বিষয়ে খুব একটা কথা বলতেও আগ্রহী নয়। সুতরাং এই টপিক সবসময় এড়িয়ে চলাই ভাল। 


P.S. My apologies if I provide any misinformation here. I'm not a writer.